ঈশ্বরদীতে বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ বানিজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ


ঈশ্বরদী নিউজ টুয়েন্টিফোরঃ প্রকাশের সময় : জুলাই ৩০, ২০২৩, ৮:১৮ পূর্বাহ্ণ /
ঈশ্বরদীতে বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ বানিজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামানের অনিয়ম দূর্নীতি ও নিয়োগ বানিজ্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।

শনিবার (২৯ জুলাই) বিকালে উপজেলার মশুরিয়াপাড়া বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঘন্টা ব্যাপি প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামানের অনিয়ম দূর্নীতি ও নিয়োগ বানিজ্যের প্রতিবাদে এলাকাবাসী, অভিভাবক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানের নিয়োগ বাণিজ্যের প্রতিবাদে তার বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় খবর পেয়ে ঈশ্বরদী থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা বলেন,ঈশ্বরদী পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের মশুরিয়াপাড়া এলাকায় ১৯৯৫ সালে বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় বঙ্গন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়। ২৭ বছর আগে বিদ্যালয়টি ৮জন শিক্ষক নিয়ে এমপিওভূক্ত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে এলাকাবাসী বড়াইগ্রাম থানার মোঃ মনিরুজ্জামানকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। সেই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পেয়েই এলাকাবাসীকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে একের পর দূর্নীতি করে নিজের আত্মীয় স্বজনকে নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়টিকে নিজ বাড়ি বানিয়ে ফেলেন। থালা-বাটি হাতে করে এসে কয়েক বছরের মধ্যে নিয়োগ বানিজ্য করে বিদ্যালয়ের পাশেই জমি কিনে দ্বিতল অট্টালিকা নির্মান করেন।

প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়টিকে আত্মীয় করনের মাধ্যমে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান নিম্নস্তরে নেমে গেছে।এলাকাবাসীর অভিযোগ প্রধান শিক্ষক আত্মীয় করণের মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য করায়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের বিদ্যালয়টি তার সুনাম ও মর্যাদা ক্ষুন্ন করতে বসেছি।
এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করেন এই দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক দুর্নীতির মাধ্যমে নিজের শালা, ভাইয়ের বউ, খালাতো ভাই, মামাতো ভাই এবং সম্পর্কে আত্মীয়-স্বজনকে নিয়োগ দিয়ে বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নিজ পরিবার বানিয়েছেন।
বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই ইংরেজির শিক্ষক সংকট থাকার কারণে একজনকে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়, বেতন না হওয়ায় সে অল্প কিছুদিন চাকরি করে অন্যত্র চলে যায়, সেই থেকে ইংরেজির কোন শিক্ষক নিয়োগ না করে, মানিক নামে একজন অযোগ্য শিক্ষক দিয়ে ইংরেজির ক্লাস করানোর কারণে, ছেলেমেয়েরা ইংরেজি বিষয়ে অনভিজ্ঞ থাকেন এবং প্রতিবছরই অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী ইংরেজিতে ফেল করেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কাউন্সিলর অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোপন বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ৪ জন এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক একজন নিয়োগ দিয়ে আনুমানিক ৩০ লক্ষ টাকার নিয়োগ বাণিজ্য সম্পন্ন করেন।

এ ব্যাপারে স্কুলের ছাত্র সাইফুল, হানিফ, নাহিয়ান জানান, তাদের ইংরেজি ক্লাস অঙ্কের ক্লাস হয় না। যার কারণে তাদের স্কুলে পড়াশোনার মান অনেক নেমে গেছে, এলাকার অভিভাবকরা জানান ২৭ বছর ধরে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত, কিন্তু অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কোনরকম আলাপ-আলোচনা না করে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে, প্রভাবশালী বিভিন্ন মানুষকে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের বসিয়ে তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এই নিয়োগ বাণিজ্য করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ওয়াহেদুজ্জামান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন এ বিষয়ে এখনো কেউ আমাকে অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নায়েব আলী বিশ্বাসের কাছে নিয়োগ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না, শিক্ষা অফিসার নিয়োগ দিয়েছেন, এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু বলেও নি এ বিষয়ে আমি কিছু জানিও না।
এলাকাবাসীর দাবি সকল গোপন নিয়োগ বাণিজ্য বাতিল করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাছাই করে উপযুক্ত লোককে নিয়োগ দান করা হোক।

error: Content is protected !!