অবশেষে চার দিন পর ক্লাসে ফিরলেন ঈশ্বরদীর ৬ শিক্ষক


ঈশ্বরদী নিউজ টুয়েন্টিফোরঃ প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১, ১১:৩৯ অপরাহ্ণ /
অবশেষে চার দিন পর ক্লাসে ফিরলেন ঈশ্বরদীর ৬ শিক্ষক
  • প্রায় দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর সারাদেশের মতো ঈশ্বরদী উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও দাদাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪ দিন ক্লাসে ফেরেননি ৷

তাদের দাবি উচ্চতর স্কেল/বি.এড স্কেল না হওয়ার কারণে তারা ক্লাসে ফেরেননি বলে জানা গেছে। গত ৪ দিন ধরে শিক্ষকরা স্কুলে এলেও কোনো শ্রেণি কক্ষে যাননি, পাঠদানও করেননি শিক্ষার্থীদের। প্রধান শিক্ষক একাই সব শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন। এ অবস্থায় স্কুলের ৩শ শিক্ষার্থীর পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিলো বলে জানা গেছে।

 

এ ঘটনা পৃথকভাবে তদন্ত করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আক্তার এবং উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুল ইসলাম। গতকাল বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দাদাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পি.এম. ইমরুল কায়েসের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তারা। জানা গেছে, স্কুলের জমি-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে পাঠদান স্বীকৃতি নবায়ন করা সম্ভব না হওয়ায় শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল/বি.এড স্কেল  না হওয়ার কারণে ৬ জন সহকারী শিক্ষক ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারা হলেন শিক্ষক মোঃ আহসান হাবিব রিপন, মোঃ সুমন আলী, মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, মোঃ আরিফুল ইসলাম, মোঃ রবিউল ইসলাম ও মোছাঃ বিলকিস খাতুন।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, স্কুলের নিজস্ব জমির পরিমাণ এক একর ০৫ শতাংশ আছে বলে কাগজপত্রে উল্লেখ থাকলেও উপজেলা ভূমি অফিসের রেকর্ডে রয়েছে মাত্র ২১ শতাংশ। নিয়ম অনুযায়ী ইউনিয়ন পর্যায়ে মাধ্যমিক স্কুলের জন্য ৭৫ শতাংশ জমি থাকা বাধ্যতামুলক হলেও এই পরিমাণ জমি স্কুলের নেই। স্কুলে কাঙ্খিত জমির পরিমাণ না থাকায় খাজনা খারিজ করা সম্ভব হয়নি। জমি-সংক্রান্ত এই জটিলতার কারণে পাঠদানের মেয়াদ ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হবার পর আর নবায়ন করা সম্ভব হয়নি। পাঠদানের মেয়াদ না থাকলেও ০৯/১২/২০২০ খ্রিঃ তারিখে বি.এড স্কেলের জন্য অন-লাইনে তথ্য প্রেরণ করা হলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফাইলটি বাতিল করে ফেরত পাঠায়।
প্রধান শিক্ষক খালেদা আক্তার বলেন, স্কুলের সামগ্রিক সমস্যা সমাধানের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সব পর্যায়ে জানানো হয়েছে। সহকারী শিক্ষকরা ক্লাস না নেওয়ায় আমি প্রধান শিক্ষক হয়ে সব শ্রেণির ক্লাস একাই সামলাচ্ছি। উচ্চতর স্কেল/বিএড স্কেল বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক জানান সহকারী শিক্ষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ও মোঃ আরিফুল ইসলামের বি.এড প্রশিক্ষণ গ্রহনের কোন অনুমোদন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি দেয় নাই।
তিনি আরও জানান, কোভিট-১৯ এর কারণে শ্রেণী কক্ষে সরাসরি পাঠদান বন্ধ ছিল কিন্তু অন-লাইন ক্লাসের নির্দেশনা থাকলেও কোন শিক্ষক অন-লাইন ক্লাসে অংশ গ্রহন করেনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র বিদ্যালয়ের সভাপতি মহোদয় পি.এম. ইমরুল কায়েস স্যারের মৌখিক নির্দেশে শিক্ষকরা কেন শ্রেণি কক্ষে পাঠদান থেকে বিরত আছেন তা তিন কর্মদিবষে জানতে চাওয়া হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনা তদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আক্তার বলেন, উপজেলার দাদাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন মাধ্যমিক ও উচ্চ  শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পাবনা বরাবর পাঠানো হয়েছে।
অবশেষে বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) পাবনা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম মোসলেম উদ্দীন দাদাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন। আন্দোলনের সেই ৬ শিক্ষকের সমস্যা নিরোসনের জন্য চেষ্টা করা হবে বলে জানান। পরে ঐ ৬ শিক্ষক আন্দোলন বন্ধ করে ক্লাসে ফিরে আসেন।
বাংলাদেশ//১০//ডি ডি//রা
error: Content is protected !!